কারো গিবত হয়ে গেলে করণীয়
- আপডেট সময় : ০৩:০২:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ ১৪৪ বার পড়া হয়েছে
গিবত একটি ভয়াবহ পাপ। এটি নীরব ঘাতকের মতো। মুসলমানের অজান্তেই নেকির ভাণ্ডার শেষ করে দেয়। এটি চুরি-ডাকাতি, সুদ-ঘুষ, ব্যভিচার ও মরা মানুষের পচা গোশত খাওয়ার চেয়েও মারাত্মক ও নিকৃষ্ট। বিস্ময়ের কথা হলো এ জঘন্য পাপটি মানুষ সব সময়ই করে থাকে।
গীবত মূলত একটি সামাজিক ব্যাধি। যেমনিভাবে এর পরকালীন কঠিন শাস্তি রয়েছে, তেমনিভাবে রয়েছে দুনিয়াবি অশান্তি, বিশৃঙ্খলা, কলহসহ নানান সমস্যা। আল্লাহ তাআলা একে অপর মুসলিম মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন।
এজন্য প্রত্যেক মুসলমানের জন্য করণীয় হলো, অন্যের ফিকির ছেড়ে নিজের ফিকিরে ব্যস্ত থাকা। নিজের আখেরাতের ফিকির করা। গীবত থেকে তখনই বিরত থাকতে পারবেন, যখন নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন।
নিজর আখেরাত নিয়ে চিন্তা করবেন। অন্য কী করলো কী বলল এটার জন্য আল্লাহ আপনাকে ধরবে না। আপনি কী কললেন আর কী করলেন, এটাই পরকালে জবাব দিতে হবে। এ কথা যদি মনে থাকে তাহলে দুনিয়ায় এ গীবতের মতো জঘণ্য গুনাহ থেকে বিরত থাকা যাবে।
গীবত হয়ে গেলে করণীয় হলো, যার গীবত করে ফেলেছেন সে যদি জীবিত থাকে, তার ঠিকানা জানা থাকে, তাহলে তার সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তার থেকে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া।
আর যদি তার সাথে সুসম্পর্ক গড়া সম্ভব না হয়, বা তার ঠিকানা জানা না থাকে অথবা সে মৃত্যু বরণ করে, তাহলে তার জন্য দোয়া ইস্তেগফার করা। আশা করা যায় এটি আপনার গীবতের গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআনে কারিমে বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশ্ত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা কবূলকারী, অসীম দয়ালু। (সুরা হুজরাত ১২)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, পেছনে ও সামনে প্রত্যেক পরনিন্দাকারীর জন্য দুর্ভোগ-ধ্বংস। (সুরা হুমাজাহ ১)
হযরত আবু হুরায়রা রা. সূত্রে বর্ণিত, একবার রসুলুল্লাহ সা.-কে প্রশ্ন করা হলো, গিবত কী? তিনি বলেন, তোমার ভাইয়ের ব্যাপারে তোমার এমন কিছু বলা, যা শুনলে সে অসন্তুষ্ট হয়।
আরও পড়ুন: দোয়া কবুল হওয়ার তিন আমল
পুনরায় প্রশ্ন করা হলো, আমি যা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে বর্তমান থাকে? তিনি বলেন, তুমি যা বলো তা যদি তার মধ্যে থাকে তাহলেই তুমি তার গিবত করলে। আর তুমি যা বলো তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তাকে মিথ্যা অপবাদ দিলে। (আবু দাউদ ৪৮৭৪)










