আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতা-কর্মীরা এতিমের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে- এবিএম মোশাররফ হোসেন
- আপডেট সময় : ০৫:৪৫:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫ ১২৯ বার পড়া হয়েছে
বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মূল প্রতিদ্বন্ধী মনে করতেন শেখ হাসিনা। এ কারণে খালেদা জিয়াকে সব সময় শেখ হাসিনা ভয় পেতেন। যার কারণে খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ মামলায় মিথ্যা অজুহাতে জেলে রেখেছিলেন। খালেদা জিয়াকে বারবার বলা হয়েছিল, আপনি বিদেশ চলে যান। আপনাকে জেলে দেয়া হবেনা। কিন্তু খালেদা জিয়া বলেছিলেন এ দেশের মানুষ আমাকে ভালোবাসে। এ দেশের মানুষকে রেখে আমি কোথাও যাব না। অথচ কীনা শেখ হাসিনা পালিয়ে চলে গেছে। আর আজকে অসহায় হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতা-কর্মীরা এতিমের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কলাপাড়া উপজেলা ও পৌর শাখা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
উপজেলা মহিলা দলের জেষ্ঠ্য সহসভাপতি নার্গিস জামানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা সীমা, বিশেষ বক্তা ছিলেন পটুয়াখালী জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা রুমা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন সিকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান, কলাপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি গাজী মোহাম্মদ ফারুক, সাধারণ সম্পাদক মুসা তাওহীদ নাননু মুন্সী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উপজেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক নার্গিস আক্তার।
এ উপকূলে আজ সকাল থেকেই বৈরি আবহাওয়া বিরাজমান ছিল। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই অনুষ্ঠিত হলো উপজেলা ও পৌর শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এবিএম মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, আগামী দিনে তারেক রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। তারেক রহমান বলেছেন, অনেকের আয়ের পথ নাই। এ জন্য নারীরা যাতে স্বচ্ছভাবে চলতে পারে সে জন্য তারেক রহমান বলেছেন প্রত্যেক পরিবারে একটি ‘ফ্যামিলি কার্ড’ করে দিবেন। পরিবারের বয়োজেষ্ঠ্য নারীর নামে এ কার্ডটি দেয়া হবে।
বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হলে দলের কর্মসূচি কী হবে তা তুলে ধরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, যাঁরা পড়াশোনা শেষ করে চাকরির জন্য চেষ্টা করবে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সেসব শিক্ষার্থীদের এক বছর পর্যন্ত বেকার ভাতা দেয়া হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে উপজেলা পর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য ক্রয় করবে।
এ দেশের নারী সমাজের উন্নতিতে বিএনপি কী করেছে তা তুলে তিনি আরও বলেন, ১৯৮০ সালে জিয়াউর রহমান যৌতুক বিরোধী আইন পাশ করেছিলেন। কেন করেছিলেন? নারীরা যাতে পুরুষদের দ্বারা নির্যাতিত না হয়, আমাদের দেশের নারীরা যাতে নিরাপদে বসবাস করতে পারে সে জন্য এ আইন তৈরি করা হয়েছিল। সবচেয়ে বড় কথা হলো বাংলাদেশের নারী সমাজকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যতগুলো ভালো কাজ করেছে, তার বেশিরভাগই করেছে জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়া। এ জন্য নারী সমাজকে বিএনপির পাশে থাকার আহবান জানান বিএনপির এ কেন্দ্রীয় নেতা।
শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মোশাররফ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে গেছে। অথচ তাঁর দলের কোনো মন্ত্রী, এমপি এমনকি দেশের মানুষের কথা তিনি চিন্তা করেন নি। শুধু নিজেদের জীবন বাঁচানোর চিন্তাই শেখ হাসিনা করেছেন। অন্তবর্তী সরকারের সময় এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা পরিবারের একজন লোকও গ্রেপ্তার হয় নাই। কারণ, তাঁদেরকে আগেই ভাগিয়ে দিয়েছে।
আগামী দিনে বিএনপি ভোটে জিতবে, বিএনপি সরকার গঠন করবে, বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনা করবে তাহলে সে দলের সাথে আমাদের থাকা উচিত, না যে দলের কোনো সম্ভাবনা নাই সে সব দলের সাথে থাকা উচিত? বিএনপির এ কেন্দ্রীয় নেতার এমন আহবানে সম্মেলনে অংশগ্রহনকারী তৃণমূল পর্যায়ের নারীরা হাত উচিয়ে বিএনপির সাথে থাকার কথা দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেন।
স্থানীয় ভোটের হিসাবের পরিসংখ্যান এবং কেন মহিলা দল গঠন করা হয়েছিল সে কথা তুলে ধরে বিএনপি নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেন, কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী আসনে পুরুষ ভোটার আছে ১ লক্ষ ২ হাজার এবং নারী ভোটার আছে ৯৯ হাজারের মতো। নারী এবং পুরুষ ভোটার বলতে গেলে সমান-সমান। আমরা মনে করি, এত বিরাট সংখ্যক নারীকে বাদ দিয়ে কখনই উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বলেছিলেন নারীকে বাদ রেখে কোনোভাবেই সমাজকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। যার জন্যই তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দল গঠন করেছিলেন।
এ ছাড়া তিনি আগামীতে প্রতিটি সংসদ নির্বাচন কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে হবে বলে জানান। স্থানীয় সরকারের প্রতিটি নির্বাচনে আর কখনই আর দলীয় প্রতীক থাকবেনা বলেও তিনি জানান। বিএনপিকে সহযোগিতা করলে কখনই বিএনপি জনমানুষের সাথে বেঈমানি করবেনা বলে দৃঢ়কন্ঠে উচ্চারণ করেন এ কেন্দ্রীয় নেতা।
পটুয়াখালী জেলা মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা সীমা সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে লিলি ইসলামকে উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি, নার্গিস আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক এবং ফারজানা শাম্মি ফ্লোরাকে পৌর মহিলা দলের সভাপতি ও মনিরা আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন।










